ডেস্ক নিউজ:
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র সাবেক এমপি এম নাসের রহসান বলেছেন,হাসিনার অবৈধ নির্দেশে দেশের চৌদ্দশ মানুষ কে হত্যা করা হয়েছে। শুধু এই জুলাই অভ্যুত্থানে বিশ হাজার মানুষ আহত হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে,বিকলাঙ্গ হয়েছে ।
যে কারণে হাসিনাকে ইন্ডিয়া থেকে এনে জেল খানার ফাঁসির দঁড়িতে নয়, বায়তুল মোকাররমের সামনে শোলের দঁড়িতে ঝোলাতে হবে। এ গণহত্যাকারি ক্ষমতা লিপ্সু খুনি হাসিনার ফাঁসি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে দিতে হবে।
শনিবার (৩ মে ) বিকেলে কাগাবালাবাজারে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৪ নং আপার কাগাবালা ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনের শুরুতে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিগণকে সাথে নিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. বদরুল আলম।
কাগাবালা ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ডা: আব্দুল আছাদ এর সভাপতিত্বে যুগ্ম আহবায়ক কবির উদ্দিনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল মুকিত,জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য বকসি মিসবাউর রহমান, মো.ফখরুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান মজনু,সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়াছ আহমদ,সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মারুফ আহমেদ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোহিত ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান সোহানসহ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গে এম নাসের রহমান বলেন, হাসিনার দুঃশাসনের কারনেই এখন আওয়ামী লীগ তো গর্তের তলে পড়ে গেছে। তাদের আগামী নির্বাচনে আর অংশ গ্রহণের সুযোগ নেই। আর আগামী নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ আসেও কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কোনো স্বৈরাচারী গণহত্যাকারী দলকে ভোট দিবে না।
জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে এম নাসের রহমান বলেন,দেখবেন একটা দলের নেতা বিরাট বিরাট বয়ান করে বেড়ান। আজকে এই কথা তো কালকে ওই কথা। মনে হয় যেন মানুষরে এমন এমন নসিহত দিয়ে যাচ্ছেন যার শেষ নাই। এরা ক্ষমতায় এলে দেশটা ধবংস করে দেবে। সেজন্য জাতীয় নির্বাচন আগে না।স্থানীয় নির্বাচন আগে এ নিয়ে নানান কথা বলছে।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষকে সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যই এতো প্রাণ দিতে হয়েছে জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গুম হত্যার শিকার হয়েছে।একটা দেশে জনগণের সুখ দুঃখের চাওয়া পাওয়ার কথা শুনতে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। এ দেশের মানুষ বিগত সাড়ে পনের বছর ভোট দিতে পারেনি। দিনের ভোট রাতে করে আমি তুমি ডামির নির্বাচন করে অবৈধ ভাবে হাসিনা দেশের জনগনকে ভোট থেকে বঞ্চিত করে রাস্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে অবৈধ ক্ষমতা ধরে রেখেছিল। তাই দেশবাসী চান দ্রুত নির্বাচন। তারা তাদের পছন্দের সরকার গঠন করবে। বিএনপিও চায় আগামী ডিসেম্বরে পৌষ মাসের ভিতরে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন হতে।
কিছু ইউটিউবারের অতিরঞ্জিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে এম নাসের রহমান বলেন,এখন নির্বাচনের কথা বললেই ফেইসবুক ইউটিউবে একটা শিক্ষিত সমাজ এরা নির্বাচনের বিরুদ্ধে কথা বলে । আরও হাস্যকর কথা বলে ডক্টর ইউনুস কে ক্ষমতায় পাঁচ বছর থাকতে। আচ্ছা এটা কি হয়? একটা গনতন্ত্রের দেশের ভেতরে নির্বাচন ছাড়া কীভাবে পাঁচবছর থাকার দাবি তুলেন?
এদিকে দীর্ঘ সতের বছর পর স্থানীয় বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। সরাসরি গোপন ভোটের মাধ্যমে সভাপতি- সস্পাদক পদে তাদের পছন্দের নেতৃত্ব নির্বাচিত করেন। কাউন্সিলে মোট ভোটার ছিলেন ৪৫৯ জন। কাস্ট হয় ৪৪১ টি। সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন,মোট চার জন সাধারণ সম্পাদক পদে দুই জন।
সভাপতি পদে ২২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন আকতার হোসেন দলা। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আব্দুল মতিন প্রাপ্ত ভোট ১৪৩ টি, আবুল কালাম আজাদ পান ৬২ টি ভোট,মালিক মিয়া পান মাত্র ২ ভোট। বাতিল ভোট সাতটি। সাধারণ সম্পাদক পদে মোস্তাফিজুর রহমান ২৫১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শামসুল ইসলাম পান ১৮০ ভোট। বাতিল ভোট ১০ টি। দুটি বুথে বিকেল তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভোট গ্রহণ করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান মজনু ও সিনিয়র বিএনপি নেতা আয়াছ আহমদ। তাদের সহযোগীতা করেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য জিল্লুর রহমান,কাজল মাহমুদ, শেরওয়ান আহমদ ও মিলাদ হোসেন।
সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মারুফ আহমেদ জানান,কাগাবালা ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলের মাধ্যমে সদর উপজেলার মোট ১২ টি ইউনিয়নের ১৩ টি ইউনিটের সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্মেলন ও গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সমাপ্তি হয়।