নিউজ ডেস্ক :
আজ ৩০ মে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিপথগামী সেনাসদস্যদের হাতে তিনি নিহত হন।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বানী দেন। বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ,বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ বিনির্মানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের আধাঁরে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে পাক হানাদার বাহিনী ঢাকার ইপিআর হেডকোয়ার্টার, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবন ও হলে টার্গেট করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান জাতিকে পরবর্তী কোনো নির্দেশনা না দিয়ে ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করেন। এমনি এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে জাতিকে উজ্জীবিত করতে অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড মেজর জিয়াউর রহমান কর্ণেল অলি আহমদ বীর বিক্রম(ততকালীন ক্যাপ্টেন)সহ সেনাবাহিনীর একদল তরুণ বাঙালি অফিসারকে নিয়ে বিদ্রোহ করেন। সেনাবাহিনীর মতো একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীতে থেকে ব্যর্থ হলে নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড হতে পারে একজন সেনাকর্মকর্তার এভাবে দেশের জন্য বিদ্রোহ করা জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেমের বহি:প্রকাশ। পাশাপাশি চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে ‘আমি মেজর জিয়া বলছি… ‘ ঘোষণা মুক্তিযুদ্ধে দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। এমনকি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল।
এছাড়া ১৯৭৫ সালে বিক্ষুব্ধ সেনাকর্মকর্তাদের হাতে প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে আবারও জাতি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তখন দেশে চলছিলো ক্যু পালটা ক্যু। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা এবং জিয়াউর রহমানকে বন্দী করে কারাগারে রেখে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ ক্ষমতা দখল করে নেয়।দেশ যখন এক কঠিন সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছিলো। ঠিক তখনি ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার এক ঐতিহাসিক অভূত্থানে জিয়াউর রহমানকে কারাগার থেকে মুক্ত করে সরাসরি রাষ্ট্র পরিচালনার দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। এমনি পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ এবং ইসলামী মূল্যবোধের বিশ্বাসী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশে এগিয়ে নেওয়ার জন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান অমর হয়ে আছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বার বার স্বৈরশাসকদের নির্যাতন নিপীড়ণের শিকার হয়েও বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় এখন একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলে পরিনত হয়েছে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে ভোররাতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা এবং পরবর্তীতে হত্যাকারী হিসেবে চট্টগ্রামের জিওসি মেজর মঞ্জুরকে গ্রেফতার না করে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বিষয়টি এখনো রহস্যাবৃত রয়ে গেছে। বিশেষ করে পাকিস্তান থেকে ফেরত আসা ভারতপন্থী মেজর জেনারেল হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ সেনাপ্রধান থাকাবস্থায় এবং শেখ হাসিনা ভারত থেকে দেশে ফেরার মাত্র কয়েকদিনের মাথায় জিয়াউর রহমানের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এখনো নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।