বিশেষ প্রতিনিধি :কুলাউড়ায় মনু নদীর উপর সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে অন্ত:ত ৫ বছর আগে। কিন্তু শেষ হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। ফলে নির্মাণ শেষ হওয়ার দীর্ঘ সময় ধরে সেতুটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। এখন আবার সেতুর পাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে বালু উত্তোলন করায় নানা আশংকায় স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় এক’শ কোটি টাকার এই সেতু প্রকল্পের সংযোগ সড়কের কাজ কবে শেষ হবে?;কবে চালু করা হবে স্বপ্নের রাজাপুর সেতু জানেন না স্থানীয় বাসিন্দারা । এতে স্থানীয় ৩ টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক বাসিন্দাদের মাঝে খুব ও চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার দক্ষিনাঞ্চলের ৪-৫ টি ইউনিয়নের মানুষের জনদাবির মুখে ২০১৮ সালে কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রাজাপুর এলাকায় মনু নদীর উপর একটি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে মুল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু বিপত্তি বাধে সংযোগ সড়কের কাজ নিয়ে।
সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, কুলাউড়া উপজেলার কুলাউড়া -পৃথিমপাশা- হাজীপুর- শরীফপুর সড়কের রাজাপুর সেতুর প্রকল্প প্রস্তাবনায় সড়কের ১৫তম কিলোমিটারে ২৩২ দশমিক ৯৪ মিটার পিসি গার্ডার সেতু, তিন লাখ ৪৯ হাজার ঘন মিটার মাটি ভরাট করে ৭.৫ কিলোমিটার সংযোগসড়ক নির্মাণ, ২০টি আরসিসি বক্স কালভার্ট এবং লাইটিংসহ অন্যান্য কাজ রয়েছে । জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় পাস হওয়া প্রকল্প প্রস্তাবনায় ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ব্রিজটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা ছিলো।
সেতুর উওভয় পাশে প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ইতিমধ্যে ৩ দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। ২০২১সালের জায়গায় এখন প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ।
সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন জানান, সেতুটি চলু হলে ভারতের কৈলাশহর থেকে চাতলাপুর চেকপোস্ট হয়ে আমদানি পণ্য দ্রুত চলে আসবে কুলাউড়া, জুড়ী, বিয়ানীবাজার, বড়লেখাসহ সিলেট অঞ্চলের বাজারে। আবার হাকালুকি হাওরের মাছ ও স্থানীয় ভাটাগুলোর ইট দ্রুত রপ্তানি হবে ভারতে। দূরত্ব কমে আসবে প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার। কমবে খরচ ও পণ্যের বাজার দর। চাতলাপুর স্থলবন্দরে বাড়বে আমদানি-রপ্তানি ব্যস্ততা, হবে কর্মসংস্থান। যে সেতুটি উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুনছে কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের শুকনাভী গ্রামের প্রবাসী আমির আলী, তরুণ সংগঠক তুয়েল চৌধুরী, প্রবাসী এম এ মুহিত সহ স্থানীয়রা অভিযোগ করেন,রাজাপুর সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। এভাবে চলতে থাকলে আরও ২-৩ বছর লেগে যাবে। অপরদিকে সেতুর রাজাপুর এলাকায় সেতু হতে মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যে এক কিলোমিটারের মধ্যে এখন যেভাবে ইজারাদারেরা বালু উত্তোলন করছেন আমরা চিন্তিত চালু হওয়ার পুর্বেনি সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
মৌলভীবাজার সরক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার হামিদ জানান, মাঝে কাজের গতি একটু স্লো ছিলো। এখন সংযোগ সড়কের জন্য প্রায় ৪০ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। ২২ টি কালভার্টের কাজ চলমান। সব মিলিয়ে কোথাও কোথাও ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আশা করছি চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কাজটি শেষ করতে পারবো।