স্টাফ রিপোর্টার :রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এবং এযাবতকাল সংগঠিত সকল সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন মৌলভীবাজার জেলা কমিটির যৌথ উদ্যোগে ৩১ জুলাই’২৫ বৃহস্পতিবার বিকাল ৫:৩০টায় মৌলভীবাজার চৌমুহনায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি জহর লাল দত্ত এবং সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজিব সূত্রধর। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মঈনুর রহমান মগনু, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন, জেলা কমিটির সহসভাপতি রামেন্দ্র চন্দ্র দাস, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র জেলা সংগঠক অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, যুব ইউনিয়ন জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনতোষ দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মৌলভীবাজার কমিটির সাবেক সভাপতি রেহনোমা রুবাইয়াৎ, জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সভাপতি জ্যোতিষী মোহন্ত প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পত্রপত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারলাম একটি কিশোরের ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর পোস্টকে কেন্দ্র করে একটি মহল রংপুরে ঐ গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর করে এবং লুটতরাজ চালায়। কিশোরকে আগেই পুলিশ হেফাজতে নিয়ে মামলা দেয়। গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনকে আহ্বান জানালে পুলিশ থেকে বলা হলো এখানে কোন প্রকার সাম্প্রদায়িক হামলা হবে না। কিন্তু মাইকে ঘোষণা দিয়ে মব তৈরি করে সংগঠিত এবং পরিকল্পিত ভাবে হামলা করা হলো, ভাংচুর করা হলো। আর লুটতরাজ করা হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের গবাদিপশু, সোনা, টাকা সহ মূল্যবান জিনিসপত্র। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা মূলত সরকারের পক্ষ থেকে যখন মব কে প্রেসার বলে উৎসাহিত করা হয় তারই ফসল। প্রশাসনের ব্যাপক নিষ্ক্রিয়তায় এতো বড় একটা সন্ত্রাসী হামলা এবং লুটতরাজ সংগঠিত হলো, এই দায় প্রশাসন কোনোভাবে এড়াতে পারে না। ফলে প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী একটা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের আকাঙ্খা উঠে এলেও সরকার মৌলবাদী তোষামোদিতে দেশে এমন হীন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সামপ্রদায়িক হামলা ও লুটপাটকারীদের অবিলম্বে যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা এবং পূর্বের সংগঠিত সকল সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করার দাবি জানান।